ফতুল্লায় প্রতিশোধের বলি ৭ বছরের শিশু, অপহরণের পর হত্যা

ফতুল্লায় প্রতিশোধের জেরে সাত বছরের শিশু মুস্তাকিনকে অপহরণ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—তানজিল (২৪) ও নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহ আলম (২০)। তারা ফতুল্লার লামাপাড়ার একই বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন।

জানা গেছে, মুস্তাকিনের বাবা হাশিম মিয়ার সঙ্গে তানজিলের এক মোবাইল ফোন নিয়ে বিরোধ হয়। এই বিরোধের জেরে তানজিল, সহযোগী নুর মোহাম্মদকে নিয়ে শিশুটিকে অপহরণের পরিকল্পনা করে।

৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তানজিল প্রথমে মুস্তাকিনকে ২০ টাকা দেয়, পরে চিপস কিনে দিয়ে অটোরিকশায় করে কেরানীগঞ্জের কাওটাইল এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি ঝোপে নিয়ে গিয়ে শিশুটির মুখে কস্টটেপ পেঁচিয়ে ফেলে দেয়। এরপর তানজিল সুইচ গিয়ার দিয়ে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে নিশ্চিত করে শিশুটির মৃত্যু।

এদিকে মুস্তাকিনের পরিবার নিখোঁজ শিশুর সন্ধানে মাইকিং করলে হত্যাকারীরাও এতে অংশ নেয়। কয়েকদিন পর তারা ময়মনসিংহে পালিয়ে যায়। ১৩ দিন পর ১৮ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ অজ্ঞাতনামা হিসেবে লাশটি উদ্ধার করে দাফন করে।

২০ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করে। অন্যদিকে, ৬ জানুয়ারি মুস্তাকিনের বাবা ফতুল্লা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ তদন্তে নেমে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের ৭২ দিন পর ১৮ মার্চ ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে নুর মোহাম্মদ ও পরে ফুলবাড়িয়া থেকে তানজিলকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফতুল্লায় তানজিলের বাসা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার উদ্ধার করা হয়।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান জানান, প্রতিশোধের জন্য শিশুটিকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। পরে কেরানীগঞ্জ থানার মাধ্যমে নিহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, পুলিশের কাছে রক্ষিত শিশুটির জামাকাপড় দেখে তারা পরিচয় শনাক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *