
নারায়ণগঞ্জে পারিবারিক সহিংসতার এক মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হয়েছেন রেশমি নামে এক নারী। রেশমীর অভিযোগ অনুযায়ী, তার প্রাক্তন স্বামী সোহাগ তাকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করেছেন।
রেশমি ও সোহাগের দাম্পত্য জীবন ছিল অশান্তিতে ভরা। মাদকের নেশায় আসক্ত সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে রেশমির ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত । পরিস্থিতি সহ্য করতে না পেরে প্রায় ৭-৮ মাস আগে রেশমি নিজেই তাকে ডিভোর্স দেয় এবং তাদের ছোট মেয়েকে নিজের কাছে রাখে।
ডিভোর্সের পর সোহাগ বড় মেয়েকে নিজের কাছে রেখে দেন, আর রেশমির কাছে ছোট মেয়ে থাকে। একপর্যায়ে সোহাগ ছোট মেয়েকেও দেখা করার কথা বলে নিয়ে যান, কিন্তু আর ফেরত দেননি। রেশমি চার মাস ধরে নিজের সন্তানদের দেখা না পেয়ে।
গতকাল সন্তানদের দেখার উদ্দেশে প্রাক্তন শ্বশুরবাড়িতে যান। রেশমী তার মেয়েদের জন্য কিছু টাকা ও উপহার নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়েরা জানায় তাদের বাবা ভয় দেখিয়েছে এবং বলেছে মায়ের কাছে যেতে চাইলে তাদের মেরে ফেলবে ।
এরপর রাতেই রেশমির শাশুড়ি তাকে সাবধান করে দেয় যে সোহাগ প্রচণ্ড রেগে আছে এবং কিছু একটা ঘটতে পারে।
আজ সকাল ৬:৩০টার দিকে, যখন রেশমি বাসা থেকে বের হয়, তখন হঠাৎ সোহাগ হাতে বড় একটি ছুরি নিয়ে তার দিকে তেড়ে আসে। প্রাণে বাঁচতে রেশমী রাস্তার এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পাশে গিয়ে আশ্রয় নেন, কিন্তু সোহাগ তখনও তাকে ধাওয়া করে।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পালিয়ে যায়। এরপর সোহাগ রেশমিকে মাটিতে ফেলে ছুরিকাঘাত করে। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে, তবুও সোহাগ অনবরত ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা আহত অবস্থায় রেশমিকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর রেশমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং প্রশাসনের কাছে সোহাগের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোহাগ আগেও রেশমির ওপর অত্যাচার চালাত এবং এবার সরাসরি তার প্রাণনাশের চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে পুলিশ এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। তবে রেশমি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।