ট্রিবিউন ডেস্ক রিপোর্ট :
বাংলাদেশ রেলওয়ের চিকিৎসা বিভাগে কর্মরত উচ্চমান সহকারী মোঃ জাহিদুল ইসলাম এবং এমএলএস পদে কর্মরত শুক্কুর আলী সরদারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি, প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দুই কর্মচারী সাধারণ ও নিরীহ রেলওয়ে কর্মচারীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা আদায় করেছেন এবং প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে রেলওয়ে হাসপাতালসহ স্থানীয়ভাবে তার আশেপাশে এলাকার প্রায় সব ধরনের ব্যবস্থাপনাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রেখেছেন তারা। এমনকি বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তাও তাদের প্রভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে, জাহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠ পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সাধারণ মানুষজন থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকা। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী–এমপিদের সঙ্গে তার অসংখ্য ঘনিষ্ঠ ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। সেই রাজনৈতিক ছত্রছায়াকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে গত ১৬ বছর ধরে রেলওয়ের দুর্নীতির অন্যতম মাস্টারমাইন্ড হিসেবে রাজত্ব করেছেন তিনি।
সরকার পরিবর্তনের পরও তার টিকিও ছুঁতে পারেনি কেউ। ছাত্রজনতা হত্যার মতো ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ থাকলেও এখনো বহাল তবিয়তে অফিস করছেন জাহিদুল। অপরদিকে শুক্কুর আলী সরদারও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে শুরু থেকেই দুর্নীতির ভাগীদার ছিলেন।
রেলওয়ের অসংখ্য কর্মকর্তা–কর্মচারী ও ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন—
“স্বৈরাচার আমলের দুর্নীতিবাজরা আইনের আওতায় এলেও জাহিদুল ইসলাম ও শুক্কুর আলী এখনো অদৃশ্য শক্তির ছায়ায় সুরক্ষিত। তাদের মতো দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীর কাছ থেকে আমরা কেন রক্ষা পাচ্ছি না—এই প্রশ্নের জবাব কর্তৃপক্ষকেই দিতে হবে।”
অনুসন্ধান বলছে, এই দুইজনের অবৈধ কর্মকাণ্ডে রেলওয়ের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনকে কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি৷
অভিযুক্ত মো. জাহিদুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন, রেলওয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করতে গিয়ে মন্ত্রী-এমপিদের সাথে ছবি তোলা হয়েছে৷ রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কমিটিতে আমার নাম থাকলেও তা আমার জানা ছিল না৷ নাম কাটানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছি৷ তবে আমি কোনোপ্রকার অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলাম না৷
এসময় প্রতিবেদককে অফিসে এসে চা পানের আমন্ত্রণও জানান তিনি৷
আরেক অভিযুক্ত শুক্কুর আলিকে কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি৷