নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু বিএনপি নেতা মোহাম্মদ শাহ আলম

ট্রিবিউন ডেস্ক রিপোর্ট

নারায়ণগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত আসনগুলোর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ সবসময় বিশেষ তাৎপর্য বহন করে এসেছে। রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত এ আসনটি ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বিশেষ করে বিএনপির জন্য এ আসনটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন এসেছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বাদ দিয়ে সেটিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে যুক্ত করা হয়েছে। অপরদিকে আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়নকে ফতুল্লার সঙ্গে যুক্ত করে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন। অর্থাৎ, এখন ফতুল্লা থানা, আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়ন মিলে গঠিত হয়েছে এ আসন।

এই নতুন বিন্যাসকে কেন্দ্র করে ফতুল্লা জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন এলাকার সন্তান, বিএনপির ত্যাগী ও সৎ নেতা মোহাম্মদ শাহ আলম।

স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য নেতা শাহ আলম

শাহ আলম দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। দলের ভেতরে তিনি সম্মানজনক অবস্থান ধরে রেখেছেন এবং এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝেও সৎ, ভদ্র, শিক্ষিত ও জনদরদী নেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির জন্য শাহ আলমের মতো উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী বিরল। শুধু রাজনীতি নয়, সামাজিক, ধর্মীয় ও মানবিক কর্মকাণ্ডে তার সক্রিয়তা তাকে আলাদা মর্যাদা দিয়েছে।

জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে দৃষ্টান্ত

দীর্ঘদিন ধরে শাহ আলম অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও কবরস্থানের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। জাননাহ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন ও আফিয়া জালাল ফাউন্ডেশন–এর মাধ্যমে তিনি ফতুল্লা ও আশপাশের এলাকায় নানা জনকল্যাণমূলক কাজ করেছেন।

যখনই কোনো কর্মী বা সাধারণ মানুষ সাহায্যের জন্য তার দ্বারস্থ হয়েছেন, তিনি ফিরিয়ে দেননি—এমন অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন স্থানীয়রা। ফলে তিনি স্থানীয়ভাবে হয়ে উঠেছেন মানবিক ও পরোপকারী নেতা।

স্থানীয় নেতাদের বক্তব্য ফতুল্লা থানা জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন (জিসাস)-এর সভাপতি সাঈদ দেলোয়ার বলেন,আমরা বহিরাগত প্রার্থী চাই না। ফতুল্লার মানুষ ফতুল্লার সন্তানকেই তাদের প্রতিনিধি হিসেবে চায়। শাহ আলম ভাই আমাদের প্রকৃত বন্ধু। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব যদি তাকে ধানের শীষ প্রতীকের কান্ডারী করে পাঠান, তাহলে আমরা বিজয়ী হবো।”

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ আকবর বলেন,

৪০ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আছি। আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহ আলমের মতো ভালো মানুষ বাংলাদেশের ৩০০ আসনের মধ্যে পাওয়া দুষ্কর। যদি তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, বিপুল ভোটে জয় নিশ্চিত।”

গত ২৩ জুলাই ফতুল্লার ভূঁইগড় সোনালী ক্লাব মাঠে বিএনপির কর্মীসভায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা শাহ আলমকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান। সভার এক পর্যায়ে এম এ আকবর জনতার কাছে প্রশ্ন রাখেন, আমরা কি সবাই শাহ আলমসাহেবকে চাই?”—উত্তরে পুরো মাঠ হাত তুলে সমর্থন জানায়।

এছাড়া, তরুণ প্রজন্মও শাহ আলমকে নিয়েই আশাবাদী। হাজী মিছির আলী ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি শাহরিয়ার আকবর সিয়াম বলেন,

শাহ আলম সাহেব দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন। মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থেকেছেন। তার মতো নিবেদিতপ্রাণ নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে বিএনপি ভালো ফল করবে। তরুণদের প্রথম ভোট আমরা তার পক্ষেই দিতে চাই।

৬ সেপ্টেম্বর এনায়েতনগর এলাকায় শাহ আলমের উদ্যোগে আয়োজিত এক বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্পে অংশ নিয়ে সিয়াম আরও বলেন,

৩০০ আসনে শাহ আলম সাহেবের মতো প্রার্থী পাওয়া দুষ্কর ব্যাপার। তিনি তার যোগ্যতা ও মেধায় তা প্রমাণ করেছেন।”

ফতুল্লা ও আশপাশের এলাকায় ঘুরলে সাধারণ মানুষের কণ্ঠে শোনা যায় একই দাবি—তারা বহিরাগত নয়, স্থানীয় প্রার্থী চান। আর সেই যোগ্য স্থানীয় প্রার্থী হলেন মোহাম্মদ শাহ আলম। কারণ তার অতীত কর্মকাণ্ডই এর প্রমাণ বহন করে।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ইতিহাস বলছে, এখানে জনগণ অনেক সময় প্রার্থীকে শুধু দলীয় প্রতীক দিয়ে বিচার করে না। বরং স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী হলে জয়ের সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়। ফলে বিএনপির জন্য এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—তারা কি স্থানীয় জনআকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানাবে?

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির জন্য সৎ, ক্লিন ইমেজের একজন স্থানীয় প্রার্থী খুবই জরুরি। মোহাম্মদ শাহ আলম সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে পারেন বলে মনে করছে স্থানীয়রা।

ফতুল্লার মানুষ এক কণ্ঠে বলছে, ধানের শীষ প্রতীকে যদি শাহ আলম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি একটি বড় জয় নিশ্চিত করতে পারবে। এখন সবার চোখ বিএনপির হাইকমান্ডের দিকে তারা কি এই গণআকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানাবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *