ট্রিবিউন ডেস্ক রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের আয়োজনে অনুষ্ঠিত আজমতে সাহাবা সম্মেলন ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে এক নতুন আবহ সৃষ্টি হয়েছে।সমাবেশটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের হলেও সমাবেশে বিপুল পরিমান বিএনপির কর্মী সমর্থকদের উপস্থিতি ছিলো।
০১ নভেম্বর শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত এ ধর্মীয় সমাবেশে ইসলামী মূল্যবোধ ও সাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা তুলে ধরার কথা বলা হলেও, মঞ্চ ও মাঠ—দুটো স্থানেই প্রাধান্য পেয়েছে রাজনৈতিক উপস্থিতিতে।
সম্মেলনের শুরু থেকেই নজর কাড়ে স্থানীয় বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের বিপুল উপস্থিতি। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে সংগঠিত হয়ে নেতাকর্মীরা এ সম্মেলনে যোগ দেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, ঈদগাহ ময়দানে জায়গা সঙ্কুলানেও সমস্যা দেখা দেয়। আয়োজকরা বারবার মাইকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ জানান।
সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজতে ইসলামের আমীর মহিবুল্লাহ বাবু নগরী। যদিও তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে সমাবেশে উপস্থিত হতে পারেনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন,বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। সালাউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য শোনার জন্য ভিড় বাড়তে থাকে, পাশাপাশি তাকে ঘিরে সেলফি ও গ্রুপ ছবির প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। দীর্ঘদিন পর নারায়ণগঞ্জে কেন্দ্রীয় একজন প্রভাবশালী নেতার সরাসরি উপস্থিতি বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোযোগ আরও বাড়িয়ে দেয়।
স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসলামী ধারার দলগুলোর প্রভাব বেড়েছে। বিএনপি–জমিয়ত–হেফাজত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যকার সাংগঠনিক সম্পর্কও নতুন করে জোরদার হচ্ছে। সামনে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই সম্পর্ক আরও দৃশ্যমান হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
সম্মেলনে উপস্থিত বিএনপি নেতারা দাবি করেছেন, তারা কেবল আমন্ত্রণ পাওয়ার কারণে অংশ নিয়েছেন এবং এটিকে ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার অংশ হিসেবেই দেখছেন। তাদের বক্তব্য, ইসলামী সংগঠন হোক বা সামাজিক সংগঠন—যেকোনো প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত থেকে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা একটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব।
সম্মেলনের বিভিন্ন বক্তা ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষা, সামাজিক শান্তি, নৈতিক অবক্ষয় রোধ, সাহাবায়ে কেরামের জীবনাদর্শ অনুসরণ এসব বিষয় কেন্দ্র করে বক্তব্য রাখেন। তবে মাঝেমধ্যেই বক্তৃতায় রাজনৈতিক সুর ফুটে ওঠে বিশেষ করে সাম্প্রতিক দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সামাজিক অস্থিরতা, ন্যায়বিচার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মন্তব্য উঠে আসে।জেলা ও মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরও উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
সম্মেলন শেষে বিএনপি নেতাকর্মীদের একটি বড় দল সালাহউদ্দিন আহমেদকে ঘিরে ছবি তোলে। তাকে কেন্দ্র করে কয়েক দফায় স্লোগান শোনা যায়, যা অনুষ্ঠানের ধর্মীয় পরিবেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলেও রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রকাশ করে বলে মন্তব্য করেছেন পর্যবেক্ষকরা।