স্টাফ রিপোর্টার
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের রাজনীতিতে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন পিরোজপুর ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন। একসময়ের জাতীয় পার্টির (জাপা) বড় নেতা হিসেবে পরিচিত দেলোয়ার এখন ভোল্ট পাল্টে বনে গেছেন বিএনপি নেতা। এ ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন একসময় কাচপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে সোনারগাঁ অঞ্চলে তার প্রভাবশালী অবস্থান ছিল। খোকার ছায়াতলে থেকে তিনি চাঁদাবাজি, দখলদারি, সালিশের নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর জাতীয় পার্টির অনেক নেতার মতো খোকাও আত্মগোপনে চলে যান। দেলোয়ারও কিছুদিন এলাকা থেকে বাইরে ছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি এলাকায় ফিরে বিএনপির স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং অল্প সময়েই বিএনপি নেতাদের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। এখন তিনি প্রকাশ্য সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন, এমনকি বক্তৃতাও দিচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে পিরোজপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রতনপুর এলাকায় দেলোয়ার হোসেন নিজেই আয়োজন করেন বিএনপির ৩১ দফা লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি। আশ্চর্যের বিষয়, ওই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক খাইরুল ইসলাম সজিব। সেখানে সোনারগাঁ বিএনপি ও যুবদলের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃণমূল বিএনপির অনেক নেতা বলেন, “একজন জাতীয় পার্টির বিতর্কিত নেতা আজ বিএনপির মঞ্চে উঠে বক্তব্য দিচ্ছেন—এটা কর্মীদের সঙ্গে বড় ধরণের অবিচার। যারা বছরের পর বছর বিএনপির জন্য সংগ্রাম করেছেন, তাদের পাশ কাটিয়ে একজন ভোল্ট পাল্টে আসা ব্যক্তি কিভাবে নেতার আসনে বসেন?”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেলোয়ার হোসেনের এই হঠাৎ রূপান্তর শুধু রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য। ক্ষমতার পালাবদলে টিকে থাকার জন্য তিনি নতুন আশ্রয় খুঁজে নিয়েছেন, আর স্থানীয় বিএনপির কিছু প্রভাবশালী নেতা তাকে গ্রহণ করায় তিনি নতুন পরিচয়ে মাঠে নামতে পেরেছেন।