ট্রিবিউন ডেস্ক রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্মৃতি রানী বর্মণ (২৫) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার সাত ভাইয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত স্মৃতি রানী বর্মণ কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার উত্তর দুর্গাপুর গ্রামের যতীন্দ্র চন্দ্র বর্মণের মেয়ে। তিনি সোনারগাঁয়ের বেনু চন্দ্র বর্মণের ছেলে সনজিৎ চন্দ্র বর্মণের স্ত্রী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে স্মৃতি রানীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েক ধাপে ৩ লাখ টাকা দেওয়া হলেও তারা বাকি ২ লাখ টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে।
গত ২ অক্টোবর রাতে স্মৃতি রানী তার ভাইকে ফোন করে জানান, যৌতুকের টাকা না দিলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। পরদিন সকালে আবারও ফোন করে বাকি টাকার জন্য চাপ দেওয়া হয়।
বিকেলে কুমিল্লায় অবস্থানরত স্মৃতির পরিবার বিষয়টি জানার পর সোনারগাঁয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথে দাউদকান্দি ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফোন করে জানায়, স্মৃতি অসুস্থ হয়ে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।
পরিবার দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে স্মৃতি রানীর মরদেহ দেখতে পান। পরিবারের অভিযোগ, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায় আসামিরা।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই শ্যামু চন্দ্র বর্মণ শুক্রবার রাতে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলায় স্বামী সনজিৎ চন্দ্র বর্মণ, শ্বশুর বেনু চন্দ্র বর্মণ, শাশুড়ি জোসনা রানী বর্মণ, আত্মীয় সরস্বতী চন্দ্র বর্মণসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শ্যামু চন্দ্র বর্মণ অভিযোগ করে বলেন, “পরিকল্পিতভাবে সবাই মিলে আমার বোনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। এরপর নাটক সাজাতে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়।”
সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম খাঁন বলেন, “লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, যৌতুকের নামে নারীদের ওপর এমন নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া দরকার।