আজমেরী ওসমান পালিয়ে গেলেও তাঁর অনুসারীরা এখনো না’গঞ্জে

ট্রিবিউন ডেস্ক রিপোর্ট

নারায়ণগঞ্জে মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৫১ মাস উপলক্ষে মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। বুধবার সন্ধ্যায় নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচিতে নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাড়ে ১১ বছর ধরে ত্বকী হত্যা মামলার বিচার বন্ধ রাখা হয়েছিল। ঘাতক ওসমান পরিবারের বিচার না করে শেখ হাসিনা তাঁদের বারবার পুরস্কৃত করেছেন। শেখ হাসিনা দেশের বিচারব্যবস্থাকে যেভাবে ধ্বংস করেছেন, তার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন এখনো হয়নি। বৈষম্যের বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ঘটলেও ভিন্নমতের ওপর উগ্রবাদীদের দমননীতি চলছেই।’

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেন, এখনো সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ভিন্নমতের ওপর আঘাত হানা হচ্ছে। কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে দিচ্ছে, বাউল মেলা ও মাজারে হামলা করছে, নারীরা তাদের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন—অথচ সরকার নীরব।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মনি সুপান্থ। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক দীনা তাজরীন। বক্তব্য দেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, শিশু সংগঠক রথীন চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক, সিপিবির জেলা সভাপতি শীবনাথ চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বাসদের জেলার সংগঠক সেলিম মাহমুদ ও সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।

বক্তারা বলেন, ১৯৭৩ সালে ওসমান পরিবার জাকসুর সাধারণ সম্পাদক রোকনকে হত্যা করেছিল আর ২০১৩ সালে তারা ত্বকীকে হত্যা করে। আজমেরী ওসমান বিদেশে পালিয়ে গেলেও তাঁর অনুসারীরা এখনো নারায়ণগঞ্জে নানা অপকর্মে জড়িত। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে তাঁদের আশ্রয়-প্রশ্রয় অব্যাহত আছে।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খান রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে স্বীকার করেন, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ মার্চ র‍্যাব এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদের টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে এবং অভিযোগপত্র অচিরেই আদালতে দেওয়া হবে। কিন্তু এত বছর পরও সেই অভিযোগপত্র জমা পড়েনি। ত্বকী হত্যার বিচার ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *