ট্রিবিউন ডেস্ক রিপোর্ট
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের আড়াইহাজার উপজেলায় বিএনপির পক্ষে ব্যাপক গণসংযোগ চালাচ্ছেন ঢাকা-বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের মা, ছোট ভাই ও দুই চাচা। পরিবারিকভাবে বিএনপির পক্ষে নির্বাচনী মাঠে এমন সরব উপস্থিতি স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জানা গেছে, নজরুল ইসলাম আজাদের মা, ছোট ভাই রাকিবুল ইসলাম রাকিব, চাচা লুৎফর রহমান ও মতিউর রহমান মতি গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে প্রতিদিনই ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি তুলে ধরছেন ভোটারদের সামনে। পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণকে সরকারের বিরুদ্ধে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।
আড়াইহাজারের বিভিন্ন ইউনিয়নে আজাদ পরিবারের সদস্যদের নেতৃত্বে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তারা রাস্তাঘাট, বাজার, হাট-বসতিপল্লী, স্কুল-কলেজের আশপাশ, চায়ের দোকানসহ জনবহুল স্থানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করছেন। স্থানীয়দের হাতে লিফলেট তুলে দিয়ে বিএনপির আন্দোলন, দলীয় কর্মসূচি এবং আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
গণসংযোগকালে আজাদ পরিবারের সদস্যরা সাধারণ ভোটারদের নানা সমস্যা ও অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। অনেকে বর্তমান সরকারের প্রতি অসন্তোষ ও পরিবর্তনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। পরিবারটি ভোটারদের আশ্বাস দিচ্ছেন যে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং স্থানীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে।
গণসংযোগের এক পর্যায়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নজরুল ইসলাম আজাদের ছোট ভাই ও স্থানীয় ব্যবসায়ী রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন,
নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে আড়াইহাজার উপজেলায় বিএনপি থেকে মনোনয়ন যেই পাক না কেন, আমরা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করে যাবো। দলের সিদ্ধান্তই আমাদের কাছে চূড়ান্ত। আমাদের পরিবারের লক্ষ্য হচ্ছে দলের প্রার্থীর পক্ষে জনগণকে সংগঠিত করা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পরিবার বহুদিন ধরে আড়াইহাজারে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আমরা সবসময় পাশে আছি। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ের জন্য তৃণমূল পর্যায়ে কাজ চালিয়ে যাবো।
আড়াইহাজারে নজরুল ইসলাম আজাদ ও তার পরিবারের একটি উল্লেখযোগ্য সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সাংগঠনিক কাজে যুক্ত থেকে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে আস্থা অর্জন করেছেন। দলের কেন্দ্রীয় পদে থেকেও নিয়মিত এলাকায় উপস্থিত থেকে কর্মীদের পাশে থাকার কারণে তৃণমূল পর্যায়ে তার জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে।
তার মা ও ভাইসহ ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনও স্থানীয় সমাজে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে তাদের এই পরিবারিক গণসংযোগকে অনেকেই বিএনপির জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। স্থানীয় রাজনীতিবিদদের মতে, আজাদ পরিবারের এই মাঠপর্যায়ের তৎপরতা ভোটারদের মধ্যে দলের প্রতি আস্থা বাড়াতে সাহায্য করবে।
আজাদ পরিবারের সদস্যরা গণসংযোগের সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছেন। এসব লিফলেটে বিএনপির দাবি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের লক্ষ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা, নিরপেক্ষ নির্বাচন, নাগরিক স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি দমন ও অর্থনীতির পুনর্গঠনসহ নানা বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে।
স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, এসব লিফলেট হাতে পেয়ে তারা বিএনপির কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারছেন। কেউ কেউ নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, যদি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, তাহলে তারা পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবেন।
আজাদ পরিবারের গণসংযোগের পাশাপাশি উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও নিয়মিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। দলীয় নেতারা ইউনিয়ন পর্যায়ে বৈঠক করছেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং ভোটের আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিএনপির স্থানীয় নেতাদের দাবি, বর্তমান সরকারের নানা ব্যর্থতায় সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে এই সুযোগে তারা গণমানুষের পাশে থাকতে চাচ্ছেন।
আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, আজাদ ভাইয়ের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। এখন তারা যেভাবে তৃণমূলে নেমে কাজ করছেন, তাতে বিএনপির পক্ষে জনমত গড়ে উঠছে। মাঠপর্যায়ে দলের কর্মীদেরও নতুন উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে।
আসন্ন নির্বাচনের আগে আড়াইহাজারে বিএনপির পক্ষে নজরুল ইসলাম আজাদের পরিবারের গণসংযোগ দলীয় রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করছে। স্থানীয় পর্যায়ে পরিবারটির এই সক্রিয় ভূমিকা তৃণমূল ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ তৈরি করছে, যা ভবিষ্যতে বিএনপির প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এখন দেখার বিষয়—কেন্দ্রীয় বিএনপি কাকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নেয় এবং আজাদ পরিবারের এই সংগঠিত তৎপরতা কতটা ফলপ্রসূ হয় নির্বাচনের মাঠে।