সজীব হোসেন (সোনারগাঁ প্রতিনিধি)
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থার অব্যবস্থাপনা ও মানবিক সংকটের চিত্র ফুটে উঠেছে এক শিক্ষিকার কান্নাজড়িত অভিজ্ঞতায়। শুক্রবার মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় তার স্বামী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি স্থানীয় একটি পুরাতন প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান।কিন্তু সেখানে চিকিৎসার পরিবর্তে উপেক্ষা ও অমানবিক আচরণের সম্মুখীন হন।
শিক্ষিকা জানান,রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার পরও কর্তৃপক্ষ কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি প্রাথমিক সেবা—বিছানায় শোয়ানো বা প্রেসার চেক করার ব্যবস্থাও ছিল না। দীর্ঘ অনুরোধ ও পরিচয় দেয়ার পর অনিচ্ছাসত্ত্বেও রোগীকে একটি বেডে রাখা হয়। পরে মালিক ও কর্মীরা জানান, “রোগীকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যান।”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যদি প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে এমন হাসপাতাল কিভাবে অনুমোদন পায়?”
পরে অনেক কষ্টে রোগীকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার রোগীর অবস্থা দেখে ঢাকা মেডিকেল বা প্রো-অ্যাকটিভে নেয়ার পরামর্শ দেন। যদিও হাসপাতালের বাইরে থেকে আনা ইসিজি রিপোর্টে রোগীর অবস্থা মাঝারি ধরণের পাওয়া যায়, ডাক্তার জানান রোগী স্ট্রোক করেছেন।
শিক্ষিকা বলেন, নিজের প্রচেষ্টা, মানসিক সাপোর্ট ও প্রাথমিক যত্নের ফলে তার স্বামী ধীরে ধীরে সুস্থতার দিকে ফেরেন। কিন্তু সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকও অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, “এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই, কিছু হলে দায় নেব কিভাবে?”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ডাক্তার হওয়ার আগে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তারা যেন মানবিক মানুষ হন। ব্যবসায়ী নয়, যেন প্রকৃত চিকিৎসক হয়ে ওঠেন। মানুষের জীবনের মুল্য যাদের কাছে নেই, তারা কিভাবে হাসপাতাল চালায়?”
এ ঘটনায় এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে— শুক্রবারে প্রাইভেট ও সরকারি হাসপাতালে যদি জরুরি সেবার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষ অসুস্থ হলে আশ্রয় নেবে কোথায়।