
ট্রিবিউন স্পেশাল রিপোর্ট :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচনে ভুয়া পরিচয়ে অংশগ্রহণ এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ রায়ান ইসলামের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত রাইয়ান নারায়ণগঞ্জের রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের ২৭তম ব্যাচের ছাত্র।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাইয়ান ইসলাম নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের ছাত্র পরিচয় দিয়ে শহীদুল্লাহ হলের বাসিন্দা হিসেবে ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী দাবি করেছেন। তার নির্বাচনী প্রচারপত্রে তাকে “ডাকসু প্রার্থী” হিসেবে উল্লেখ করা হয় এবং ব্যালট নম্বর ১৬১ ব্যবহার করা হয়। তিনি নিজেকে ‘রেড জুলাই’ নামক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা বলেও দাবি করেছেন।
তবে প্রকৃতপক্ষে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত ব্যালট বরাদ্দের তালিকা অনুযায়ী, ব্যালট নম্বর ১৬১ বরাদ্দ করা হয়েছে মোঃ সজিব হোসাইন নামক এক শিক্ষার্থীর জন্য, যিনি ফলিত গণিত বিভাগের ছাত্র এবং শহীদুল্লাহ হলের নিবন্ধিত ভোটার। একইসাথে, সজিব হোসাইনই ‘রেড জুলাই’ সংগঠনের আসল প্রতিষ্ঠাতা বলে জানা গেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে রাইয়ান ইসলাম ডাকসু নির্বাচনে নিজের প্রচারণা চালায় এবং এ পরিচয়ের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক মহল থেকে চাঁদা আদায় করে, যা স্পষ্টভাবে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির আওতায় পড়ে। এমনকি অনেকে বলছেন, এভাবে সাধারণ মানুষের আস্থা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মানকে ব্যবহার করে সে ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক লাভ করেছে।
এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী প্রকৃত প্রার্থী মোঃ সজিব হোসাইন বলেন, “এ ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড শুধু আমার ব্যক্তি সুনাম নয়, বরং পুরো ডাকসু নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমি চাই, এই বিষয়ে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিক।”
এ বিষয়ে রণদা প্রসাদ সাহা’র একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক যে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী এমন অপরাধের সাথে জড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।”
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই অভিযুক্ত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তারা বলছেন, যদি সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও শিক্ষার্থী বা তরুণ এমন প্রতারণায় উৎসাহী হয়ে উঠবে।
এই বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত রাইয়ানকে তার ব্যক্তিগত এই নাম্বারে +880 1975-794005 একাধিকবার মুঠোফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তাই এই বিষয়ে তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারো প্রমাণিত হলো, শিক্ষাঙ্গনের বাইরে কোনো কিছু দাবি করলে তা অবশ্যই যাচাই করে দেখা প্রয়োজন। অন্যথায় প্রতারণার শিকার হওয়া খুবই সহজ।