আজমেরী ওসমানের ক্যাডার ইভন হত্যার নেপথ্যের রহস্য কি?

স্পেশাল রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ইসদাইর এলাকায় কিশোর গ্যাং লিডার নাহিয়ান আজম ওরফে ইভনকে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওসমানী মাঠের সামনে পরিকল্পিতভাবে পাগলা সাইফুল, সফিকুল ও বাবু আপন তিন ভাই কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ইভনকে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে খানপুর হাসপাতাল এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ইসদাইর বাজারে পাগলা সাইফুলের মাদক স্পটে হামলা চালিয়ে নগদ টাকা ও মাদক নিয়ে যায় ইভন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাইফুল ও তার ভাই সফিকুল প্রতিশোধ নিতে ইভনের বাড়িতে হামলা চালায়। তখন এলাকাবাসীর সহায়তায় ইভনের স্বজনরা তাদের ধরে প্রহার করে। পরে এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয় এবং তিন লাখ টাকার বিনিময়ে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা হয়। তবে ক্ষোভ থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজছিল সাইফুল ভাইয়েরা। অবশেষে পরিকল্পিত হামলার মাধ্যমে তারা ইভনকে হত্যা করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইভন দীর্ঘদিন ধরে ইসদাইর এলাকায় কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করত। তার বাবার নাম আজম বাবু ওরফে জামাই বাবু। কিশোর বয়স থেকেই মাদক ও অপরাধে জড়িয়ে পড়ে ইভন। ধীরে ধীরে গড়ে তোলে বিশাল বাহিনী, যেখানে অন্তত অর্ধশতাধিক কিশোর যুক্ত ছিল।
২০১৩ সালে প্রকাশ্যে ফুটবলার রাসেলকে হত্যা, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইয়াবাসহ গ্রেফতার এবং জামিনে মুক্তির পর পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়া— সবই তার অপরাধজগতের অংশ। এছাড়া স্থানীয় দোকান লুট, শিক্ষার্থী নির্যাতন, এমনকি নারীদের আটকে রেখে নির্যাতনের মতো ঘটনাও তার নামে রয়েছে।
ইভনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় স্বস্তির পরিবেশ তৈরি হয়। অনেকের মতে, তার ভয়ে এলাকায় সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছিল না। আবার অন্যরা মনে করছেন, এটি মূলত প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ইভনের হত্যার নেপথ্যে প্রধান কারণ হিসেবে পুরনো দ্বন্দ্ব ও প্রতিশোধের সূত্রই সবচেয়ে জোরালোভাবে উঠে আসছে। তবে তার দীর্ঘ অপরাধের ইতিহাসই শেষ পর্যন্ত তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে অনেকের মত।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) হাছিনুজ্জামান জানান,নিহত নাহিয়ান আজম ইভন হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই এজাহারনামীয় দুই আসামী কে গ্রেফতার করেছে। তাদের কে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বেশ কিছু গুরত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *