মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে হত্যার ঘটনায় মামলা ২১ জনের নামে মামলা ,গ্রেপ্তার ১০

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সাইফুল ইসলাম সাজ্জাদ (২৪) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে গণপিটুনীতে হত্যার ঘটনায় এগারো জনের নাম উল্লেখ করে একুশ জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় দশজন আসামিকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) নিহতের মা সাজেদা আক্তার (৪২) বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন, বাগেরহাট জেলার লুৎফর রহমানের ছেলে মোঃ মশিউর রহমান (২৫), বগুড়া জেলার সদর থানার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোঃ রিয়াদ (১৯), সিদ্ধিরগঞ্জের আইলপাড়া এলাকার মোঃ আক্তার হোসেনের ছেলপ মোঃ সাইফুল ইসলাম হীরা (৩১), গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার মৃত ইদ্রিস মোল্লার ছেলে মোঃ নাছির মোল্ল্যা (৪৪), মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার মৃত সুরেশ রাজবংশীর ছেলে বাবু রাজবংশী (২৮), মুন্সিগঞ্জ জেলার টুঙ্গিবাড়ি থানার মৃত রিমন মোল্লার ছেলে মোঃ সাব্বির মোল্ল্যা (২৯), গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোঃ রেজাউল করিম (৪৬), হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল থানার জাফর উদ্দিনের ছেলে মোঃ এনামুল হক (২৪), নীলফামারি জেলার মৃত বশিরউদ্দিনের ছেলে মোঃ হামিদুল ইসলাম (৫২), লক্ষীপুর জেলার সদর থানাট মৃত ওবায়দুল হকের ছেলে নূরুল ইসলাম (৫৩), খুলনা জেলার খালিশপুর থানার মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ আল মুরাদ (৩৭)। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বাদীর অভিযোগে বলা হয়, নিহত সাইফুল ইসলাম সাজ্জাদ (২৪) পূর্বে একজন ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। দুই বছর আগে হঠাৎ মানসিক রোগে আক্রান্ত হন তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকে মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হলেও সুস্থ হননি। এ অবস্থায় তিনি প্রায়ই বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন এবং পরে ফিরে আসতেন।

গত ৬ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাজ্জাদ বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে খবর পাওয়া যায় সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়া এলাকায় ক্রাউন সিমেন্ট কনক্রিট এন্ড বিল্ডিং প্রোডাক্টস লিঃ এর অফিসের উত্তর পাশে মাটির উপর তার মরদেহ পড়ে আছে। বাদীর দাবি, এ হত্যাকাণ্ড ৬ সেপ্টেম্বর রাত ৩টা থেকে ভোর ৬টার মধ্যে সংঘটিত হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম জানান, মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এঘটনায় এখন পর্যন্ত দশজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইভন হত্যা: পগালা সাইফুলের পরে টুটুল গেপ্তার

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মাসদাইর থেকে সাইফুল ওরফে পাগলা সাইফুলের গ্রেফতারের পর কিশোর গ্যাং লিডার নাহিয়ান আজম ইভন হত্যা মামলার এজাহার নামীয় রাতুল ওরফে টুটুল(২৯) নামের আরো এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত এজাহারনামীয় আসামী রাতুল ওরফে টুটুল ফতুল্লা মডেল থানার ইসদাইর এলাকার শহিদ ভিলার ভাড়াটিয়া আলম শিকদারের পুত্র।

গত ৯ সেপ্টম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ফতুল্লার ইসদাইর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এর আগে ৮ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত নয়টার দিকে নাহিয়ান আজম ইভন হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামি সাইফুল ওরফে পাগলা সাইফুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদেরকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর রোববার রাত নয়টার দিকে নিহত কিশোর গ্যাং লিডার নাহিয়ান আজম ইভন তার দুই বন্ধু সিয়াম এবং নাছিমকে নিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে ইসদাইর থেকে জামতলার দিকে যাচ্ছিলো। পশ্চিম ইসদাইরস্থ পৌর স্টেডিয়ামের গেইটে পৌছানো মাত্র পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এজাহারনামীয় আসামি সাইফুল ওরফে পাগলা সাইফুল,তার দুই ভাই আনোয়ার হোসেন বাবু, শফিকুল ইসলাম, এবং সহোযোগি শুক্কুর ও রাতুল ওরফে টুটুল, রাজু সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩-৪ জন সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইভন মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তাকে টেনে হিচড়ে মোটর সাইকেল থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কোপায়। ইভনকে রাস্তায় ফেলে রেখে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেল ও লুট করে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরবর্তীতে ইভনকে প্রথমে শহরের খানপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহত নাহিয়ান আজম ইভনের বাবা এস,এম বাবু বাদী হয়ে শফিকুল ইসলাম, সাইফুল ওরফে পাগলা সাইফুল, আনোয়ার হোসেন বাবু এবং সহোযোগি শুক্কুর ও রাতুল ওরফে টুটুল,রাজু সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩-৪ জন কে অভিযুক্ত করে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার নামীয় আসামি সাইফুল ওরফে পাগলা সাইফুল ও রাতুল ওরফে টুুটলকে সোমবার রাতে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার দুপুরে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) হাছিনুজ্জামান জানান, নিহত নাহিয়ান আজম ইভন হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই এজাহারনামীয় দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে। তাদেরকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বেশ কিছু গুরত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *