মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব ১১

ট্রিবিউন ডেস্ক রিপোর্ট 

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন জিসান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শ্রাবণ ওরফে শাওন (২৪)–কে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১)।

সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব-১১-এর অপারেশন অফিসার মোঃ গোলাম মোর্শেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃত শাওন গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানার চরগোবরা এলাকার মোঃ ওবায়দুল্লাহর ছেলে। গত ৫ অক্টোবর রাতে র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-১-এর একটি যৌথ অভিযানে ঢাকার বিমানবন্দর রেল স্টেশন এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

ইসমাইল হোসেন জিসান ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠান ‘পাঠাও’-এর মোটরসাইকেলচালক হিসেবেও কাজ করতেন।

২০১৯ সালের ১২ মে বিকেলে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে শ্যামলীর বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরে আসেননি। পরদিন তার বাবা সাব্বির হোসেন শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজের ১১ দিন পর, ২৩ মে গাজীপুরের গাছা থানার একটি বাসার সেফটিক ট্যাংক থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

তদন্তে বেরিয়ে আসে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের চিত্র। মামলার প্রধান আসামি হাসিবুল হোসেন ওই দিন অফলাইনে ৮০০ টাকায় গাজীপুর যাওয়ার জন্য জিসানের মোটরসাইকেল ভাড়া করেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সহযোগী আসামি আব্দুল্লাহ আল নোমান ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস সংগ্রহ করেন। গাজীপুরের একটি বাসায় নিয়ে ইফতারের সময় সেই জুস পান করানো হয় জিসানকে। তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তিন আসামি মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং মরদেহ সেফটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়। পরে তারা মোটরসাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর নিহতের বাবা সাব্বির হোসেন বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন।সাড়ে পাঁচ বছর বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০২৫ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফারজানা ইয়াসমিন তিন আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—হাসিবুল হোসেন ওরফে হাসিব (গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী), শ্রাবণ ওরফে শাওন (গোপালগঞ্জ সদর), ও আব্দুল্লাহ আল নোমান (বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ)।

রায় ঘোষণার সময় হাসিবুল ও নোমানকে কারাগারে পাঠানো হয়, তবে শাওন তখন পলাতক ছিলেন। আদালত সজনী আক্তার নামে আরেক আসামিকে খালাস দেন।

রায় ঘোষণার পর থেকেই পলাতক শাওনকে ধরতে তৎপর হয় র‌্যাব। ধারাবাহিক গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযানের মাধ্যমে অবশেষে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকায় তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-১-এর যৌথ দল।

গ্রেপ্তারের পর তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *