নগরীর জিমখানা লেক থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

ট্রিবিউন ডেস্ক রিপোর্ট 

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানাধীন জিমখানা লেক থেকে প্রায় ৪০ বছর বয়সী এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে এই লাশটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি স্থানীয় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

পুলিশ জানায়, উদ্ধারকৃত লাশটি প্রাথমিকভাবে খানপুর ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে (খানপুর হাসপাতাল) পাঠানো হয়েছে এবং বর্তমানে মর্গে সংরক্ষিত রয়েছে। এখন পর্যন্ত লাশটির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা রাতের দিকে জিমখানা লেকের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় পানিতে ভাসমান অবস্থায় লাশটি দেখতে পায়। পরে তারা থানায় খবর দেয়।

পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে এবং প্রাথমিক সুরতহাল সম্পন্ন করে। নিহতের দেহে তেমন কোনো দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, তবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (১২ অক্টোবর) সিআইডির একটি বিশেষজ্ঞ টিম লাশের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও অন্যান্য বৈজ্ঞানিক উপায়ে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করবে বলে জানা গেছে। পুলিশের ধারণা, লাশটি ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পানিতে ছিল না।

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, লাশটির কোনো পরিচয়পত্র বা ব্যাগ পাওয়া যায়নি। আশপাশের থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত কোনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিচয় শনাক্তে সিআইডির ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও মুখাবয়ব শনাক্তকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

জিমখানা লেক নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি ব্যস্ত এলাকায় অবস্থিত। এলাকাবাসীর মধ্যে এই লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্ক ও নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ ধারণা করছেন, এটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে এবং লাশটি পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এটি হয়তো কোনো নিখোঁজ ব্যক্তির মরদেহ।

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান,রাতের দিকে আমরা কয়েকজন হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি লেকের একপাশে কিছু একটা ভাসছে। কাছে গিয়ে দেখি মানুষের দেহ। সাথে সাথে পুলিশে খবর দিই।”

পুলিশ জানিয়েছে, কেউ যদি নিহত ব্যক্তিকে চিনে থাকেন বা তার সম্পর্কে কোনো তথ্য জানেন, তাহলে দ্রুত নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। লাশটি শনাক্ত না হলে নিয়ম অনুযায়ী অজ্ঞাত পরিচয়ে দাফনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

থানা সূত্রে জানা গেছে, আমরা পরিচয় শনাক্তের জন্য সবধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। যদি কেউ নিখোঁজ থাকে বা কাউকে খুঁজছেন, তাহলে থানায় এসে দেখে যেতে পারেন। পরিচয় শনাক্ত হলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

শনিবার সকালে নিহতের লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। এতে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে, তবে হত্যার কোনো আলামত পেলে তা অনুযায়ী মামলা পরিবর্তন করা হবে।

ওসি (তদন্ত) বলেন,আমরা প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখছি। এটি আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা না হত্যাকাণ্ড—তা ময়নাতদন্ত ও তদন্তের মাধ্যমে পরিষ্কার হবে। সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হচ্ছে।”

জিমখানা লেক থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পুরো নারায়ণগঞ্জ শহরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত লাশটির পরিচয় উদঘাটন ও ঘটনার রহস্য উন্মোচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *