ডিসির ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার বিতরণ

ট্রিবিউন ডেস্ক রিপোর্ট

নারায়ণগঞ্জের ইসদাইর এলাকার নয় বছর বয়সী মাহির শাহরিয়ার, যিনি ডুশেন মাসকুলার ডিস্ট্রফি নামের এক বিরল ও জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজে চলাফেরা করতে অক্ষম। জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে মাহিরকে একটি অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক হুইলচেয়ার উপহার দিয়েছেন।

মাহির আগে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। পরে ভর্তি হয় খোরশেদ আলম ইসলামিয়া মাদরাসায়। হঠাৎ তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সমস্যা দেখা দেয় এবং ধীরে ধীরে হাটাচলা করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। ফলে প্রায় এক বছর ধরে মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

শিশুটির বাবা এনামুল হক জানান, পেশায় তিনি গার্মেন্টস শ্রমিক। মাসে যে আয় হয়, তাতে সংসার চললেও বিদেশে মান্তাহারের চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুর রোগ বাংলাদেশে চিকিৎসাযোগ্য নয়।

মাহিরের অসহায় পরিবার ‘মানবিক ডিসি’ খ্যাত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে সাহায্যের আশায় আশ্রয় নেন। ২২ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে মাহিরের মা সারাক্ষণ অসুস্থ সন্তানকে কোলে নিয়ে ছিলেন। শিশুর অসুস্থতা ও মায়ের মমতা দেখে জেলা প্রশাসক আবেগাপ্লুত হন। তিনি নগদ অর্থ সহায়তার পাশাপাশি ইলেকট্রনিক হুইলচেয়ার প্রদানের জন্য লিখিত আবেদন করতে বলেন।

প্রদত্ত হুইলচেয়ার পেয়ে মাহির বলেন, আমি অনেক খুশি। এখন মাদরাসায় যেতে পারব। সারাক্ষণ মায়ের কোলেও থাকতে হবে না। তার মা মিতু বেগম বলেন, ডিসি স্যার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আজ তিনি তার কথা রেখেছেন। তিনি সত্যিই মানবিক। আমার সন্তানের চিকিৎসার জন্য সবাইকে পাশে আসার অনুরোধ করছি।

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান সরদার বলেন, জেলা প্রশাসক স্যার যোগদান করার প্রথম দিন থেকেই প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নানা স্মার্ট ডিভাইস বিতরণ করেছেন। তিনি শুধু বলেন না, কাজও করে দেখান।

জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়া বলেন, শিশুটিকে প্রথম দেখার সময় আমার খুব মায়া লেগেছিল। আজ সে হাসিমুখে হুইলচেয়ার চালাচ্ছে, তাই খুব ভালো লাগছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের বাইরের আলো-বাতাসে থাকার সুযোগ যেন কখনো বন্ধ না হয়, এটাই আমাদের আহ্বান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আলমগীর হোসাইনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *